ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘শিশুদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার চেয়ে ভালো কর্মসূচি আর হতে পারে না। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হলেও মোটেও কঠিন বা দুঃসাধ্য নয়। আমরা আমাদের দায়িত্ব থেকেই এই চ্যালেঞ্জ নিয়েছি।’
গতকাল বুধবার রাজধানীতে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ডিজিটালকরণ প্রকল্পের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ডিজিটালকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল ওয়াহাব ও বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী জেসমিন জুঁই বক্তব্য দেন।
মন্ত্রী ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানসংক্রান্ত কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে কর্মসূচিটিকে একটি ভিশনারি কাজ হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা একদিন শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর ও প্রচলিত প্রাচীন শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনের ঐতিহাসিক সাক্ষী হয়ে থাকবেন।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য দীর্ঘ তিন যুগব্যাপী কাজ করে যাচ্ছি। ১৯৯৯ সালে গাজীপুরে ১৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু করি, যা এখন সারা দেশে বিস্তৃত হয়েছে।’
মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে তাঁর দীর্ঘ পথচলার চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের সবচেয়ে বড় দুটি প্রতিবন্ধকতা হলো ডিভাইস ও কনটেন্ট। গত ১২ বছরে বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী কনটেন্ট-বিষয়ক চ্যালেঞ্জটি তাঁর ২০ জন দক্ষ সহযোদ্ধাকে নিয়ে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পেরেছেন। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকের কনটেন্ট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পেরেছেন। বিনা মূল্যে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের এই কনটেন্ট দেওয়া হয়।
টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল শিক্ষা প্রসারে ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে, তা অভাবনীয় সুফল বয়ে আনবে।
জেসমিন জুঁই বলেন, এই পদ্ধতিতে শিশুরা খেলার ছলে আনন্দের সঙ্গে তাদের পাঠ্যক্রম সহজে আয়ত্ত করতে সক্ষম হবে।
এ প্রকল্পের আওতায় ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলো ডিজিটাল হবে। তাদের ক্লাসে ডিজিটাল টিভি, ল্যাপটপ ও ট্যাব থাকবে। স্কুলে থাকবে ইন্টারনেট সংযোগ। বেসরকারিভাবে ২০০০ ও ২০১৫ সালে এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা দেশে চালু হলেও সরকারিভাবে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে ডিজিটাল যন্ত্রের সহায়তায় শিক্ষার সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন এই প্রথম।
Post a Comment