বাজাজ ডিস্কোভার ১০০সিসি মোটরসাইকেল রিভিউ | Bajaj Discover 100cc Motorcycle Review

 


বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর সব দেশেই তরুণদের কাছে মোটর সাইকেল আরধ্যের বস্তু। এক ধরণের রোমাঞ্চ আছে বাইক চালানোর মধ্যে। আমিই বা বাদ যাই কেন? আমার বাবা অনেক আগে থেকেই মোটরসাইকেল চালান, বাবাকে মোটরসাইকেল চালাতে দেখতাম আর অস্থির হয়ে ভাবতাম কবে বাইক চালাতে শিখবো , কবে বাবার মতো বাইক চালাবো ?

JSC পাশ করার পরে বাবা নিজেই আমাকে বাইক চালানো শিখালেন। সেই সময় বাবা Bajaj Discover 100 ছিল। প্রায় তিন বছর আগে বাইকটি কেনা হয়েছিল, বাবা পুরাদস্তুর বাইকটি চালাইতেন। সাথে আমিও চালান শুরু করেছিলাম। বলতে গেলে আমার প্রথম বাইক, ৫বছরে যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আজ।

ডিজাইন
আমার মতে Bajaj Discover 100 বাইকটি স্টাইলের দিক থেকে সে রকম না হলেও এর ছিমছাম গঠন যেকোনো মানুষকেই মুগ্ধ করবে। বিশেষ করে যারা কমিউটার ক্যাটাগরির বাইক পছন্দ করেন। ক্লাসের ভদ্র, ছিমছাম ছেলেটিকে যেমন সবাই পছন্দ করে ছাত্র, শিক্ষক নির্বিশেষে। তেমনি আমার বাবার পারসোনালিটির সাথে বাইকটি যেমন চমৎকার মানিয়ে গিয়েছে আবার আমার পারসোনালিটির সাথেও কোন কন্ট্রাডিক্ট করে না। বাইকটির চেসিস কিছুটা বড় হবার কারণে পেছনে দুজন নিয়ে বেশ স্বাছন্দ্যে চালানো যায়। চালকের আসন তুলনামূলক সমান হওয়ার কারণে সিটে বসার পজিশান এমন হয় যে আপনি সহসা ক্লান্ত হবেন না। এর কালার কম্বিনেশান এমন যে দেখে একদম নেচারাল মনে হয়। এর সবকিছু মিলিয়ে যেমনটি আগে বলেছি সব বয়সি মানুষের সাথেই বাইকটি চমৎকার মানিয়ে যায়।

কন্ট্রোল
বলতে দ্বিধা নাই ১০০ সিসির অন্য যেকোনো কমিঊটার বাইকের থেকে Bajaj Discover 100 কন্ট্রোল অনেক সহজ । আপনি আস্তে বা জোরে যে ভাবেই চালান না কেন এর কন্ট্রোল নিয়ে আপনার কোন অভিযোগ থাকবে না। আমি সাধারনত শহরের মধ্যে অল্প দুরুত্বেই বাইক বেশী চালাই আর আমার কাছে মনে হয়েছে সহজ সরল ডিজাইনের কারণে যেকোনো বাঁক নিতে বা কাউকে সাইড দিতে এর জুড়ি মেলা ভার। এর পাশাপাশি good dimension ও ground clearance বাইকটির কন্ট্রোলে অন্যমাত্রা এনে দিয়েছে ।

ইনজিন
অনেকেই বলে থাকেন ইন্ডিয়ান বিভিন্ন মোটরসাইকেল কোম্পানির মধ্যে বাজাজের ইঞ্জিন কোয়ালিটি সবচেয়ে ভালো। বিন্দুমাত্র দ্বিধা না রেখেই বলছি তাদের সাথে আমি পুরোপুরি একমত। বাইকটি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ফোর স্ট্রোক , এয়ার কুল ৯৪.৮ সিসি ইঞ্জিন বিশিষ্ট। বাইকটির max power 8.2bhp @ 7500rpm এবং torque 7.85 Nm @ 5000rpm . এই রকম পাওয়ার আর টর্ক যদি ১০০ সিসির ইঞ্জিনে থাকে তবে নিশ্চিতে বলা যায় ইঞ্জিনের মান আর শক্তি নিয়ে কারো কিছু বলার থাকবে না। আমি গত তিন বছরে অন্য যে কয়টা ১০০ সিসির কমিউটার বাইক চালেছি তার মধ্যে আমার আমার বাইকের ইঞ্জিন পারফর্মেন্স আমার কাছে বেষ্ট মনে হয়েছে। DCDI ignition technology কারণে এই রেঞ্জের অন্যান্য বাইকের তুলনায় এর ফুয়েলের Internal Burning অনেক বেশী ভালো হয় । যদি শুধু ইঞ্জিন দিয়ে বিচার করতে বলেন আমি বলবো যেকেউ এর ইঞ্জিনের পারফর্মেন্স নিয়ে কোন অভিযোগ করতে পারবেন না।

স্পীড ও মাইলেজ
আসলে যেকনো কমিউটার বাইকের অন্যতম বৈশিষ্ট হোল এর মাইলেজ। মাইলেজ ভালো না হলে কমিউটার বাইকের কোন কদরই থাকে না। আর মাইলেজের ব্যাপারে বাজাজ বাইককে টক্কর দেয় সাধ্যি কার। এক কথায় বলবো আমি আমার বাইকের মাইলেজ নিয়ে খুবই খুশি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মাইলেজ প্রাই একই আছে। একবার মেপে দেখেছিলাম ৭০ কিমি/ লিটার যায়। অধিক মাইলেজের কারণে ভাববেন না এর স্পীড লিমিট কম। পেছনের সিটে একজন এমন কি দুজন নিয়েও আমি একাধিকবার ৯০ কিমি/ ঘন্টা গতিতে বাইকটি চালিয়েছি।

ব্রেকিং
ব্রেকিং সিস্টেম আর সাস্পেনশান মোটরসাইকের গুরুত্তপূর্ণ অংশগুলির অন্যতম। এই দুটি অংশে যদি দূর্বলতা থাকে যেকোনো সময় দূর্ঘটনার শিকার হবেন। বাইকটির সামনে পেছনে দুটিই ড্রাম ব্রেক। হ্যা সামনে ডিস্ক ব্রেক থাকলে ভালো হতো তারপরেও ড্রাম ব্রেকের পারফর্মেনেসে আমি খুশি। বাজাজ বাইকের সাস্পেনশান নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। Telescopic suspensions সামনে এবং পেছনে Nitrox suspension আপনি যে রাস্তাতেই বাইক চালান না কেনো আপনাক সব সময়ই আরামদায়ক কুসন দিবে।



ভালো দিক
যেকোনো রাস্তায় , আস্তে চালান অথবা জোরে বাইকের কন্ট্রোল অসাধারণ
আমি আগেই বলেছি বাইক্তির ইঞ্জিন এক কথায় দুর্দান্ত
বাইকটির থট্রল চমৎকার।


খারাপ দিক
যদি সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক থাকতো আরো ভালো হতো
ফুয়েল ট্যাঙ্ক তুলনামুলক ছোট


পরিশেষে বলতে চাই আমার প্রথম বাইক। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে আগেও যেমন কোন অভিযোগ ছিল না আজও নাই। আমি আমার বাইক নিয়ে খুবই খুশি



0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post