বাংলাদেশে বর্তমানে দ্রুতগতিতে অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটে চলেছে। এখন এই দেশে এমন মার্কেটপ্লেস তৈরি হয়েছে যেখানে বৈশ্বিক মানের সেরা ব্র্যান্ডগুলোর থেকে আলাদা করে নিজস্ব একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করার প্রয়োজন হয়। যে রকম শিল্পই হোক না কেনো, একবিংশ শতকে এসে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতি গঠনের ক্ষেত্রে সত্যিকারের সম্ভাবনা দেখাতে পেরেছে!
বাংলাদেশের মোটর বা অটোমোবাইল শিল্প সত্যিকার অর্থে একটি নিদর্শন হয়ে দাড়িয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করলে হয়ত একে ছোট মনে হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে এই শিল্প বৈশ্বিক মার্কেটে একটি প্রভাব সৃষ্টি করছে। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অভাবনীয় পারফর্মেন্স দেখাতে পেরেছে, যেখানে প্রতিদিন এদেশে প্রায় ৭০টি গাড়ি বিক্রি হচ্ছে। এই দেশের ছোট পরিবহন খাতের জন্য এটি একটি বিশাল মাইলফলকের মত, কিন্তু প্রতি বছরই এই সংখ্যায় নতুন করে রেকর্ড গড়াটা এখন নিশ্চিত। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে এই বিগত ৫ বছরে বিক্রিত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।
বাংলাদেশ গাড়ি আমদানি করার সময় সেরা ব্র্যান্ডের গাড়ি যেমন নিয়ে আসে, তেমনই পাশাপাশি আমদানিকৃত গাড়ির উপর বিশাল পরিমান ট্যাক্সের কথা মাথায় রেখে কিছু সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়িও আমদানি করে থাকে। এদেশের উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবার গুলো প্রতিনিয়ত সহনীয় দামের রিকন্ডিশনড গাড়িতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বেশি। তার উপর ক্রেডিট সুবিধার প্রচলন হবার সাথে সাথে মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক গুনে বেড়ে গিয়েছে। এর সাথে যোগ হয়েছে যথাযথ গণপরিবহনের অভাব, যার দরুন বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যের রিকন্ডিশনড গাড়ির বিক্রিতে একটি বিশাল মাত্রায় উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
চলুন দেখে নিই বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় গাড়ি সমূহের একটা তালিকার এক ঝলক:
ক্রম | কোম্পানি ও মডেল | দামের ধরণ |
১ | টয়োটা করোলা | ১০ থেকে ১৩ লাখ+ টাকা |
২ | টয়োটা নোয়াহ | ২০ থেকে ২৫ লাখ+ টাকা |
৩ | মিতসুবিশী পাজেরো | ৭০ থেকে ৯০ লাখ+ টাকা |
৪ | টয়োটা এলিয়ন | ২০ থেকে ২৫ লাখ+ টাকা |
৫ | টয়োটা এক্সিয়ো টয়োটা প্রোবক্স টয়োটা ফীল্ডার | ১০ থেকে ১৫ লাখ+ টাকা ৭ থেকে ১০লাখ+ টাকা ১২ থেকে ১৭ লাখ+ টাকা |
এবার আসুন বাংলাদেশে গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে যাবার পেছনে কাজ করা বিশেষ ফ্যাক্টর গুলোর কয়েকটি দেখে নিই।
ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পেছনে সহায়ক শক্তি
বাংলাদেশ ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিক্স (বিবিএস) এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে মাত্র এক যুগ আগেও জন প্রতি ইনকাম ৫০০ মার্কিন ডলারের কম ছিল। এরপর সবচেয়ে সমসাময়িক ২০১৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সংখ্যা বেড়ে গিয়ে জন প্রতি ১৭০০ মার্কিন ডলারের বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ (বিসিজি) একটি গবেষণা চালিয়ে জানিয়েছে যে প্রতি বছর বাংলাদেশে অর্থনৈতিক দিক থেকে নতুন করে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মধ্যবিত্তদের কাতারে প্রবেশ করছেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, এই দেশের অর্থনৈতিক পুনরূজ্জীবন লাভের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা গুলোই জলজ্যান্ত প্রমাণ স্বরূপ। বাংলাদেশের মোটর পরিবহন শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাংক লোন একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিনিয়ত অধিক পরিমানে গ্রাহক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান সমূহ আরো ভালো রেটে গাড়ির জন্য লোন নেয়াকে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। ২০১৫ সালে একটি আদর্শ গাড়ির লোনে ১৫% এর বেশি সুদ ছিলো, যা আজকের দিনে ১০% এরও কমে নেমে এসেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো ধীরে ধীরে সুদের হার কমিয়ে দিচ্ছে এবং এভাবে গ্রাহকদের যানবাহনের পেছনে খরচ করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ভাষ্যমতে এই বছরে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি গাড়ির লোন মঞ্জুর করা হয়েছে, যা আগের বছরের রেকর্ডের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি। একটি বিশাল শতাংশে গ্রাহকরা তাদের নতুন কিংবা ব্যবহৃত বাহনের পেছনে গাড়ির লোন ব্যবহার করে থাকেন। আমাদের নতুন একটি প্রবন্ধ থেকে আপনার পরিবারের জন্য সেরা গাড়িটি বেছে নেয়ার টিপস টি দেখে নিন।
দিন কে দিন ঋণ খেলাপিদের হার বেড়ে চলেছে এবং একই সাথে বেড়ে চলেছে সময় মত ঋণ পরিশোধের পরিমাণও। বর্তমানে গাড়ি ট্র্যাক করার আরো উন্নত উপায় যেমন রেজিস্ট্রেশন, মডেল নাম্বার এবং অন্যান্য ট্রাফিক উন্নয়ন আসার কারণে এই বৃদ্ধির গতি আরো ত্বরান্বিত হচ্ছে। লোন ফেরত, পেমেন্ট সম্পন্ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাফল্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে গ্রাহকদের ধার দেবার শিল্পের মধ্যে এটি একটি অন্যতম সফল শিল্প।
অতএব, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় গাড়ির মধ্যে সেরা ঠিক কোনগুলো? বাংলাদেশে একটি প্রচলিত গাড়ির আদর্শ দাম কি রকম? সেরা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে বিশেষ কয়েকটি এই মার্কেটে কেমন পারফর্ম করছে? বিলাসবহুল গাড়িই কি একমাত্র অপশন, নাকি বাড়তে থাকা মধ্যবিত্ত মানুষের জন্যেও বাংলাদেশে সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়ি রয়েছে?
আপনার মাথায় আসা এ সব রকম প্রশ্নের উত্তর আমরা আজ দেব। কিন্তু তার আগে চলুন দেখে নিই এই মার্কেটে কোন গাড়ি গুলোর চল চলছে। চলুন আমরা দেখে নিই বাংলাদেশে সর্বাধিক বিক্রিত ৫টি গাড়ি কোনগুলো ও তাদের বৈশিষ্ট্য :
১. টয়োটা করোলা
সারা বিশ্বে কেউ অবাক হবে না যদি আপনি বলেন যে টয়োটা করোলা এক কথায় বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক বিক্রিত গাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম। তথাপি, বাংলাদেশে সর্বাধিক বিক্রিত গাড়িগুলোর মধ্যে সেরা গাড়ি এটিই। সত্যি বলতে আপনি যখন এই সেরা ৫ গাড়ির তালিকাটি এক নজর দেখবেন, তখনই বুঝে যাবেন যে বাংলাদেশে সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়িগুলোর বেশির ভাগই টয়োটা কোম্পানির। এই দেশের যেকোন রাস্তায় খেয়াল করলে অন্তত একটি টয়োটা করোলা মডেলের গাড়ি দেখতে পাবেনই। ১৯৬৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম টয়োটা করোলা গাড়ি উন্মোচন হওয়ার পর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের যেকোন প্রান্তে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে চলেছে এই মডেলটি পুরোদমে।
ঢাকায় একটি ভালো ধরণের টয়োটা করোলা এক্স গাড়ি খুঁজে দেখলে ১৩ লাখ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। নতুন হোক কিংবা আদিম কালের অবস্থায় হোক, রিকন্ডিশনড মডেলগুলোর পেছনে আপনাকে আধিক খরচ করতে হবে।
২. টয়োটা নোয়াহ
আমাদের তালিকায় পরবর্তী নামটি টয়োটার আরো একটি সর্বাধিক বিক্রিত মডেল, যার নাম টয়োটা নোয়াহ। যেখানে টয়োটা করোলা একটী কমপ্যাক্ট আকারের ব্যাপক জনপ্রিয় গাড়ি, সেখানে নোয়াহ হলো একটি মিনি-ভ্যান বা বাংলাদেশের রাস্তায় চলা একটি বড় মাপের মাইক্রোবাস। ২০০১ সালে উন্মোচনের পর থেকে প্রতিটি বছরের ভিন্ন ভিন্ন নোয়াহ গাড়ির মডেল আজ বাংলাদেশের যেকোন রাস্তায় পার্ক করা কিংবা চলমান অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়, ঠিক টয়োটা করোলার মতই। এই গাড়িটি বাংলাদেশে পারিবারিক ভ্রমণ, পিকনিক এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বের হওয়ার জন্য আদর্শ একটি গাড়ি, যার আসন সংখ্যা প্রায় ১০ জনের মত।
পারিবারিক গাড়ি হিসেবে বাংলাদেশে সর্বাধিক ব্যবহৃত গাড়ি হচ্ছে নোয়াহ। যদিও পুরনো মডেলগুলো বেশ কম দাম যেমন ১০ লাখ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়, সেগুলো দৈনন্দিন পারিবারিক ব্যবহারে জন্য ঠিক যথাযথ নয়। নতুন মডেলগুলো কেনার জন্য আপনাকে ২০ লাখ টাকার বেশি খরচ করতে হবে।
৩. মিতসুবিশী পাজেরো
বিলাস এবং ক্ষমতার সাথে যুক্ত আরেক নাম মিতসুবিশী পাজেরো। ১৯৮২ সালে উন্মোচনের পর থেকে শুরু করে আজও বাংলাদেশের রাস্তা গুলোতে পাজেরো গাড়ি মাথা উচু করে টহল দেয়। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে ক্ষমতাবান ও অভিজাত শ্রেণীর মানুষের কেনার ক্ষমতা প্রদর্শন করে আসছে পাজেরো, আর এভাবেই এটি যায়গা করে নিয়েছে এদেশের সেরা ৫টি সর্বাধিক বিক্রিত গাড়ি সমূহের তালিকায়। এটা বেশ বড় একটি গাড়ি, মালিকদের আর্থিক, রাজনৈতিক, কিংবা খরচ করার ক্ষমতার সাথে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে আছে এমন একটি এসইউভি (স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকল) এই পাজেরো। মার্সিডিজ বেঞ্জ আর বিএমডব্লিউ এর মত বড় বিলাসবহুল গাড়ির তালিকায় হয়ত একে ফেলা যাবে না, তবুও বাংলাদেশের রাস্তায় রাস্তায় পাজেরো নিজস্ব একটি মর্যাদা তৈরি করে নিয়েছে।
দানবীয় আকৃতির পাজেরো গাড়ির একটি পুরনো মডেল বাংলাদেশে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে বেশ ভালো ভাবে পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি যদি সত্যিকার অর্থে এই বিলাসবহুল গাড়ির বিভিন্ন সুবিধা উপভোগ করতে চান তাহলে প্রায় ৯০ লাখ টাকার মত খরচ করার চিন্তা মাথায় রাখুন।
৪. টয়োটা এলিয়ন
বাংলাদেশে টয়োটা এলিয়ন নিঃসন্দেহে এক অন্যতম বিলাসবহুল কিন্তু খুব বেশি ব্যয়বহুল নয় এমন একটি গাড়ির অপশন। ২০০১ সালে এটি উন্মোচিত হওয়ার পর, এটি টয়োটা ক্যারিনাকেও ছাড়িয়ে গেছে খুব দ্রুত। এটি বিলাস এবং সঞ্চয়ের একটি দারুন সমন্বয়, এমন একটি বাহন যা একই সাথে স্টাইলিশ এবং আরামদায়ক। চোখের তৃপ্তি দেয়ার পাশাপাশি এর বিভিন্ন ভার্সন যেমন প্রিমিও, এ১৫ ইত্যাদি এলিয়নের আপগ্রেড করা রূপ, যাতে যোগ হওয়া বিশেষ ফিচারসমূহ বর্তমান প্রজন্মের চ্যালেঞ্জিং চাহিদা গুলোকেও তৃপ্তি দিতে সক্ষম। স্বভাবগত ভাবে এটি বাংলাদেশে অন্যতম মসৃণ ড্রাইভিং এর অভিজ্ঞতা দিতে পারে, যা একই সাথে নির্ভরযোগ্য এবং স্টাইলিশ।
টয়োটা এলিয়নের অনেকগুলো ভার্সন রয়েছে এবং এগুলোর একটি ব্যবহৃত মডেল বাংলাদেশে ১৫ লাখ টাকার সামান্য বেশি দামে পাওয়া যায়। কিন্তু প্রিমিও এর নতুন মডেল গুলোর দাম আরো অনেক বেশি হয়।
৫. টয়োটা এক্সিয়ো / প্রোবক্স / ফীল্ডার
এই তালিকার পঞ্চম এবং চূড়ান্ত অবস্থানে আমাদের চোখে বাংলাদেশের কয়েকটি জনপ্রিয় এবং সর্বাধিক বিক্রিত টয়োটা গাড়ি ড্র করেছে। টয়োটা এক্সিয়ো, প্রোবক্স এবং ফীল্ডার, এই তিনটি গাড়ি তাদের সেলস, জনপ্রিয়তা, ফাংশন ও সাশ্রয়ের হিসাবে সমান অবস্থানে রয়েছে।
টয়োটা এক্সিয়ো বৃহত্তর করোলা গাড়ির ক্যাটাগরীতে পড়ে। বেশির ভাগ দেশেই একে টয়োটা করোলা গাড়ির একটি জেনারেশন কিংবা ভার্সন হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বাংলাদেশ ও এশিয়ার অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি এক্সিয়ো হিসেবেই উন্মোদিত হয়েছিলো এবং আজও চলে আসছে। এই কমপ্যাক্ট আকৃতির সেডানটি টয়োটা এলিয়নের অন্যতম কম মূল্যের বিকল্প গুলোর মধ্যে একটি।
দামের ভিত্তিতে এক্সিয়ো টয়োটা করোলার মত ঠিক একই দরে পাওয়া যায়, তাই একটি সাধারন ভালো মডেল বাংলাদেশে ১২ লাখ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু নতুন মডেল কিংবা হ্যাচ-ব্যাক বা পিছন খোলা গাড়ি কিনতে হলে আপনাকে আরো একটু বেশি খরচ করতে হবে।
টয়োটা প্রোবক্স একটি দারুন হ্যাচ-ব্যাক গাড়ি যা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়িগুলোর মধ্যে একটি। একটি সেডান গাড়ির মত অনেক বেশি যায়গা দেয়ার পাশাপাশি, এর হ্যাচ-ব্যাক হিসেবে যোগ হওয়া অতিরিক্ত দৈর্ঘ্য আপনার গাড়ির স্টোরেজ ব্যবস্থায় একটি বাড়তি মাত্রা যোগ করে। যেহেতু বাংলাদেশের বেশির ভাগ গাড়ি একটি বাড়তি সিএনজি ট্যাংকের সাহায্যে চলে, সেই হিসেবে এই বাড়তি যায়গা একটি নরমাল কার্গোর তুলনায় আপনার ট্যাংক রাখা ও বাড়তি মালামাল নেয়ার জন্য বেশ কাজে দিতে পারে।
খুব সহজেই প্রোবক্স বাংলাদেশের অন্যতম সাশ্রয়ী মূল্যের গাড়িগুলোর মধ্যে একটি, অন্তত এই তালিকার গাড়িগুলোর মধ্যে তো বটেই। এর একটি পুরনো মডেল ১০ লাখ টাকারও কম দামে ঝামেলা ছাড়াই কেনা সম্ভব।
টয়োটা ফীল্ডার হলো আরো একটি হ্যাচ-ব্যাক গাড়ি, যা প্রোবক্সের আরো বেশি স্টাইলিশ একটি ভার্সন। যদিও এটা প্রোবক্সের মত একই রকম ফিচার, যায়গা বা স্পেসিং এবং অন্যান্য সুবিধা দেয়, তারপরও এটি ডিজাইনে আরো বেশি মসৃণ এবং এর ফিচারগুলো যথেষ্ট সমসাময়িক ও আপডেটেড। এটি প্রোবক্সের তুলনায় বেশ ব্যয়বহুল, কিন্তু এর বাহ্যিক রূপ ও আধুনিক ফিচারসমূহের জন্য এই দামই যথাযথ।
একটি ভালো ফীল্ডার গাড়ি লোকাল মার্কেটে প্রায় ১৭ লাখ টাকার মত দামে পাওয়া যেতে পারে এবং এর নতুন মডেল গুলো, বিশেষ করে কালো রঙের মডেলটি কিনতে হলে আপনাকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মত দিতে হবে।
উপসংহার
এটা ভেবে অবাক হবার কিছু নেই যে বাংলাদেশের সেরা গাড়ির তালিকায় অন্যান্য সেরা ব্র্যান্ড গুলোর চেয়ে একটি বৈশ্বিক মানের সেরা ব্র্যান্ডের নামই ঘুরে ফিরে এসেছে বারবার, তা হলো টয়োটা। এর পেছনে সবচেয়ে বড় ও স্বাভাবিক একটি কারণ হলো টয়োটার পার্টস সব যায়গায়ই ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়, যার কারণে বাংলাদেশে গাড়ির দামের কথা ভেবে দেখতে গেলে এই ব্র্যান্ডটি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। অন্যান্য উৎপাদক, যেমন হিউন্ডাই, মিতসুবিশী বা যেকোন সেরা ব্র্যান্ডের সাথে তুলনা করে দেখলে, টয়োটা সবচেয়ে বেশি সাশ্রয়ী এবং সর্বাধিক লভ্য একটি ব্র্যান্ড।
এছাড়াও টয়োটা অন্যান্য বিলাসবহুল মডেলের গাড়িও অফার করে থাকে যেগুলো কে আমরা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি নি কারন এগুলোর কোনটিই বাংলাদেশের লোকাল মার্কেটে সর্বাধিক বিক্রিত গাড়ি নয়। একটি গাড়ির জ্বালানি খরচ, কমপ্যাক্ট আকৃতি, কঠোর রাস্তায় পারফর্মেন্স ইত্যাদির ভিত্তিতে সাশ্রয়ী মূল্যের হিসাব বা সামগ্রিক খরচের হিসাব করা হয় এবং এই দেশে জনপ্রিয়তা লাভের জন্য এই বৈশিষ্ট্য গুলোয় উত্তীর্ণ হওয়া খুবই জরুরি। টয়োটার যেকোন মডেলের গাড়িই বিলাস ও এই দেশের রাস্তাঘাটের সাথে খাপ খেয়ে চলার মত ক্ষমতার মাঝে এক দারুন সমন্বয়, আর সেজন্যই এটি বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত ব্র্যান্ডের গাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আশা করি এই প্রতিবেদনটি আপনাকে কিছু নতুন তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছে, আর যদি তা নাও পারে, অন্তত আপনি বাংলাদেশের মোটর পরিবহনের শিল্প বা মার্কেট সম্পর্কে যা কিছু জানেন, তার ব্যাপারে পুনরায় নিশ্চিত হতে পারবেন। এই বিষয়ে আপনার মতামত এবং এখানে উল্লেখিত যেকোন কথার সাথে আপনি একমত নাকি দ্বিমত তা আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
আমি এখানে আমার রিসার্চ এবং সর্বোচ্চ জ্ঞানের ভিত্তিতে বাংলাদেশের অটোমোবাইল শিল্প প্রসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত মতামত একাহ্নে উপস্থাপন করেছি। আমি পরামর্শ দেব আপনিও আপনার পরবরতী গাড়িটি কেনার আগে আপনার মত করে রিসার্চ করে নিন। এ উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র অনলাইনে থাকা সূত্র ছাড়াও, বিভিন্ন গাড়ির শো-রুমে নিজে থেকে ঘুরে দেখে আসুন এবং ভালো ভাবে নিশ্চিত হয়ে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।
Post a Comment